ব্যবহৃত অলংকারের যাকাত কে দেবেন ? স্বামী নাকি স্ত্রী
মমিনুল ইসলাম মোল্লা,কালেমা ও নামাজের পরই যাকাতের স্থান। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন নামাজের সাথে সাথেই পবিত্র কুরআন মাজিদে যাকাতের কথা বলেছেন।
তোমরা নামাজ কায়েম করো , যাকাত আদায় করো, এ ধরণের আয়াত পবিত্র কুরআন মাজিদের বহু যায়গায় আছে। সাড়ে ৫২ তোলা রূপা বা সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ কারো আওতাধীন ১ বছর থাকলে তা যাকাত আদায় যোগ্য হবে। তৎকালীন সময়ে নিদিষ্ট পরিমিান স্বর্ণ ও রৌপ্যের দাম সমান ছিল। কিন্তু এখন সমান নয়। তাই কেউ কেউ বলেন রূপার হিসেবে আমার যাকাত ওয়াজিব হলেও সোনার হিসেবে হয়নি। এব্যপারে ওলামায়ে কেরামের অভিমত হলো সমাজে যদি গরীব লোকের সংখ্যা বেশি হয় তাহলে রৌপের হিসেবেই যাকাত দেয়া উচিত। স্বর্ণ ও রূপার আলাদা আলাদা নিসাব নির্ধারিত থাকলেও কেউ কেউ হিসেবে ভুল করেন। স্বর্ণকে রূপার মূল্যে পরিণত করে নতুন নিসাব বানানোর চেষ্টা করেন। অর্থাৎ কারো যদি ৩ ভরি স্বর্ণ থাকে তাহলে স্বর্ণের হিসেব অনুযায়ী তার যাকাত ওয়াজিব হয় না। স্বর্ণের অর্থমূল্যকে রৌপ্যর অর্থ মূল্যে পরিবর্তন করলে রৌপ্যের হিসেবে নেসাব পূর্ণ হয়। এভাবে পরিবর্তন করা সহিহ হাদিস সম্মত নয়। আল্লাহ বলেছেন “‘ আল্লাহ ও তার রাসুল কোন বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোন মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার থাকবে না। (সুরা আযহাব-৩৬)। তাই কোন ব্যাপারে উল্টো যুক্তি পেশ করা উচিত নয়। বিষয়টি মেনে নেয়াই মুমিনের জন্য যথেষ্ট। সম্পদ কমে যাবে এ ধারণা নিয়ে যাকাত আদায় করলে তা শুদ্ধ হবে না। যাকাতের মাধ্যমে সম্পদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। নবিজি সাঃ বলেন, যাকাতে সম্পদ কমে না। ( মুসলিম ৬৭৫)। আল্লাহ স্বল্প সম্পদের মধ্যেই বরকত প্রদান করে সম্পদের কার্যকরী ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারেন। তাই যাকাতে সম্পদ কমে যায় এ ধারণা করা ঠিক নয়। স্বর্ণ অলংকার ছাড়া দেনমোহরের টাকাই নারীদের সম্বল। দেন মোহরের টাকা নগদ প্রদান করা হলে সে টাকা নেসাব পরিমান হলে এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর শতকরা আড়াই শতাংশ হারে যাকাত দিতে হবে। টাকার নেসাব হচ্ছে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্যের সমপরিমান অর্থ।
হযরত আবু আশআরি রাঃ রসুল সাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন, “আমার উম্মতের মধ্য হতে নারীদের জন্য রেশমী পোশাক এবং স্বর্ণ হালাল করা হয়েছে। আর এ দুটি জিনিস পুরুষদের জন্য হারাম করা হয়েছে। (আহমাদ৪/৩৯৩)। আমাদের দেশে বিশেষ করে বিয়ের সময় পুরুষকে স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতে দেখা যায়। হযরত আাব্দুল্লাহ বিন শাদ্দাদ ইবনুল হাদ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা রাসুল সাঃ এর স্ত্রী হযরত আয়েশা রাঃ এর খিদমতে উপস্তিত হই। তখন তিনি বলেন, একদা রাসূল সাঃ আমার নিকট উপস্থিত হয়ে আমার হাতে রূপার বড় বড় আংটি দেখতে পান। তিনি বলেন, হে আয়েশা এটা কি? আমি বল্লাম , হে আল্লাহর রসুল আপনার উদ্দেশ্যে রূপ চর্চা করার জন্য বানিয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কি এর যাকাত পরিশোধ কর? আমি বল্লাম না। রাসল সাঃ বল্লেন, তোমাকে দোযখে নিয়ে যাওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। ( সুনানে আবু দাউদ ১৫৬৫)। মহিলাদের ব্যবহৃত গহনা তথা স্বর্ণ রৌপ্যের যাকাত কে দেবে? স্বামী নাকি স্ত্রী এ নিয়ে সংসারে তর্ক বিতর্ক হয়ে থাকে। স্বামী হয়তো বলবে এগুলো তো তুমি ব্যবহার করো , আমি এখানে টাকা খরচ করবো কেন? স্ত্রী বলতে পারে স্ত্রী, পুত্র, কন্যা সবই তোমার সম্পদ। তাই এ সম্পদের বিধিসম্মত সংরক্ষণে তুমিই ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে স্বামী দিয়ে দিলে উত্তম কিন্তু স্বামী স্ত্রী কেউ যদি যাকাত আদায় না করে তাহলে স্ত্রী গুনাহগার হবে। এজন্য স্ত্রী ইচ্ছে করলে একটি আংটি অথবা ছোট কোন অলংকার বিক্রি করে যাকাত আদায় করতে পারে। সোনার গহনার পরিমান যদি সাড়ে সাত ভরিই হয় তাহলে পরের বছর আর ( একটি অংটি বিক্রি করে দেয়ায় কমে গেল) যাকাত আদায় করতে হবে না। যদি টাকা দিয়ে যাকাত আদায় করে তাহলে প্রতি বছর যাকাত আদায় করতে হবে। যাকাত দেয়ার বহু খাত রয়েছে। এর মধ্যে গরীব আত্মীয়-স্বজনও যাকাত পেতে পারে। তবে স্ত্রী স্বামীকে যাকাত দিতে পারবে কি না? এ নিয়ে ওলামায়ে কেরামদের মধ্যে মত পার্থক্য রয়েছে। ইমাম অঅবু হানিফা, ঈমাম মালেক, ও ঈমাম আহমদ রহঃ এর এক বক্তব্য অনুযায়ী দিতে পারবে না। আমাদের উচিত যথাসময়ে যথানিয়মে যাকাত আদায় করে দায় মুক্ত হওয়া। লেখকঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লা, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক ও সাংবাদিক, ধর্মীয় গবেষক, কুমিল্লা।০১৭১১৭১৩২৫৭
ওহির আলোকেঃ ব্যবহৃত অলংকারের যাকাত
আল্লাহ বলেছেন “‘ আল্লাহ ও তার রাসুল কোন বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোন মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার থাকবে না। (সুরা আযহাব-৩৬)।
। বিষয়টি মেনে নেয়াই মুমিনের জন্য যথেষ্ট। সম্পদ কমে যাবে এ ধারণা নিয়ে যাকাত আদায় করলে তা শুদ্ধ হবে না। যাকাতের মাধ্যমে সম্পদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। নবিজি সাঃ বলেন, যাকাতে সম্পদ কমে না। ( মুসলিম ৬৭৫)।
হযরত আবু আশআরি রাঃ রসুল সাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন, “আমার উম্মতের মধ্য হতে নারীদের জন্য রেশমী পোশাক এবং স্বর্ণ হালাল করা হয়েছে। আর এ দুটি জিনিস পুরুষদের জন্য হারাম করা হয়েছে। (আহমাদ৪/৩৯৩)।
হযরত আাব্দুল্লাহ বিন শাদ্দাদ ইবনুল হাদ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা রাসুল সাঃ এর স্ত্রী হযরত আয়েশা রাঃ এর খিদমতে উপস্তিত হই। তখন তিনি বলেন, একদা রাসূল সাঃ আমার নিকট উপস্থিত হয়ে আমার হাতে রূপার বড় বড় আংটি দেখতে পান। তিনি বলেন, হে আয়েশা এটা কি? আমি বল্লাম , হে আল্লাহর রসুল আপনার উদ্দেশ্যে রূপ চর্চা করার জন্য বানিয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কি এর যাকাত পরিশোধ কর? আমি বল্লাম না। রাসল সাঃ বল্লেন, তোমাকে দোযখে নিয়ে যাওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। ( সুনানে আবু দাউদ ১৫৬৫)।
মমিনুল ইসলাম মোল্লা,

0 Comments