জানাবত থেকে ঃ গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা লাভ
মমিনুল ইসলাম মোল্লা,
গোসলের উদ্দেশ্য হচ্ছে পবিত্র হওয়া। আমরা সাধারণত দৈহিক সুস্থতা ও আরামের জন্য গোসল করি।
পারিবারিক জীবনের আওতায় আমরা যৌন জীবন যাপন করি। এক্ষেত্রে আমরাদের উপর গোসল ওয়াজিব হয়। নাকে পানি না দিয়ে নদীতে নেমে ইচ্ছেমত ডুবিয়ে কিংবা উন্নত মানের সাবান ব্যবহার করে গোসল করলেও ধর্মীয় দৃষ্টিতে পবিত্রতা অর্জন হয় না। তাই প্রত্যেকেরই গোসলের নিয়ম-কানুন জানা প্রয়োজন। তা না হলে কেউ যদি ৪০ বছর সংসার করে তবে তার গোটা পারিবারিক জীবনই ভুলপথে পরিচালিত হবে। পবিত্রতা বাদে নামাজ হয় না। তাই ইসলমী নিয়ম অনুযায়ী গোসল করা প্রত্যকে মুসলমানের প্রয়োজন। আভিধানিক অর্থে গোসল হলো কোন বস্তুর উপর পানি প্রবাহিত করা। ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট কোন কারণে সমস্ত শরীরে পবিত্র পানি প্রবাহিত করাকে গোসল বলা হয়। নাপাকি ২ প্রকার। বড় নাপাকি থেকে মুক্ত হতে হলে গোসল করতে হবে। আল্লাহতায়ালা রাব্বুল আলামিন বলেন, যদি তোমরা অপবিত্র থাক তবে ভালবাবে পবিত্র হও। সুরা মায়িদা -৬) রাসুল (সাঃ ) স্ত্রীদের হক আদায় করতেন । তিনি এক রাতে পর্যায়ক্রমে তার স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হলে তখন তার নয়জন স্ত্রী ছিলেন। (সহিহ বুখারি -২৮৪) । স্ত্রী সহবাসের ফলে ওয়াজিব হওয়া গোসলকে জানাবতের গোসল বলা হয়। এ সম্পর্কে তাফসিরে তাহফিমুল কোরানে বলা হয়েছে - কোরানে উল্লেখিত মূল মব্দটি জুনুবান। এর মানে হচ্ছে দূর হয়ে যাওয়া, দূরত্ব ও সম্পর্কহীনতা। এ থেকে “ আজনবী” শব্দটি বের হয়েছে। শরীয়তের পরিভাষায় জুনুবা বা জানাবত অর্থ হচ্ছে যৌন প্রয়োজন পূর্ণ করার এবং স্বপ্নের মধ্যে বীর্যপাত হবার ফলে যে নাপাকি সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় মানুষ পবিত্রতাশূণ্য হয়ে পড়ে। আবু সাঈদ খুদুরী (রাঃ ) রাসুল (সাঃ ) থেকে বর্ণনা করে বলেন, পানি পানিকে আবশ্যক করে। ( মুসলিম ৪৩০ ) অন্য হাদিসে এসেছে, উত্তেজনাবশত বীর্য নির্গত হলে গোসল কর। ( সহিহ আবু দাউদ)। এঅবস্থায় ব্যক্তি নাপাকীর সম্মুখীন হলেও সে স্বাভাবিক কাজকর্ম ও চলাফেরা করতে পারবে। আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন, তাঁর সঙ্গে মদীনার কোন এক পথে নবি (সাঃ ) এর দেখা হলো। আবু হোরায়রা তখন জানাবতের অবস্থায় ছিলেন। তিনি বলেন, আমি নিজেকে নাপাক মনে করে সরে পড়লাম। পরে আবু হোরায়রা গোসল করে এলেন। পুনরায় সাকআত হলে রাসুল (সাঃ) জিজ্ঞেস করলেন- হে আবু হোরায়রা কোথায় ছিলে? আবু হোরায়রা বল্লেন, আমি জানাবতের অবস্তায় আপনার সঙ্গে বসা সমিচীন মনে করিনি। তিনি বলেন, সুবহানাল্লাহ। মুমিন কখনও নাপাকি হয় না। সহিহ বুখারি২৮৩) জানাবতের গোসলের আগে রাসুল (সাঃ) খুব কমই ঘুমাতেন। তাই পবিত্র হয়ে ঘুমানো উত্তম। তিনি যদি ঘুমাতেন তাহলে দু হাত ধুয়ে লজ্জাস্থান ধৌত করে সালাতের ওজুর মতো ওজু করে ঘুমাতেন। পুরুষদের প্রস্রাবের পর এক ধরণের ঘন সাদা পানি জাতীয় পদার্থ বের হতে পারে। এটি ওদি নামে পরিচিত। এটিও নাপাক। সুনানে বায়হাকীতে এব্যপারে বলা হয়েছে, ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, মনি, ওদি ও মযির হুকুম হলো মনি বা বীর্য নির্গত হলে গোসল করতে হবে বাকীগুলোতে লজ্ঝাস্থান ধুয়ে অজু কওে নিলে পবিত্র হওয়া যাবে।স্বামী-স্ত্রী অন্তরঙ্গ অবস্থায় থাকলে , আদর, সোহাগ বা সহবাসের প্রাথমিক চিন্তায় স্বামী বা স্ত্রীর যৌনাঙ্গ থেকে সাদা আঠালো পানি বের হতে পারে। এটি সাধারণত মযি নামে পরিচিত। এব্যপারে নবিজীকে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জনৈক সাহাবী জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সে তার লজ্জাস্থান ধৌত করবে এবং ওজু করবে। তবে মযি কাপড়ে লাগলে তা পষ্কিার করওে সে কাপড়ে নামায পড়তে পারবে। 
0 Comments