ধর্ম
যে কোন পেশায় দক্ষতা অর্জনের জন্য পেশাগত শিক্ষার বিকল্প নেই। তবে কেউ কেউ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করেও কর্মজীবনে ভাল করতে পারেন না। আবার এর ব্যতিত্রæমও দেখা যায়। এমনই একজন রাখেন ব্যতিক্রমধর্মী ওয়ায়েজীন আলহাজ্ব মোজাফফর হোসেন মোল্লা। তিনি পেশাগতভাবে একজন ব্যবসায়ী হলেও বক্তা হিসেবে তার খ্যাতি ছড়িয়ে আছে দেবিদ্বার, বুড়িচং, চান্দিনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। তিনি মহিলাদের প্রিয় মাওলানা হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত।
আলহাজ্ব মোজাফফর হোসেন মোল্লা দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে ৭৮ বছর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আলহাজ্ব হাসিদ আলী মোল্লা। তিনি এলাহাবাদে লেখাপড়া শেষে মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা নাই বল্লেই চলে।
তিনি হুজুরের কাছে শুধুমাত্র কোরান শরীফ শিক্ষা লাভ করেন। বাকী বিষয়গুলো তিনি স্বীয় চেষ্টায় আয়ত্ব করেন। বাংলায় হাদিস, কোরান, বিভিন্ন ইসলামী মনীষীর লেখা ইসলামী গ্রন্থ থেকে তিনি জ্ঞানার্জন করেন। তিনি শিক্ষাগুরু হিসেবে পারুয়ারার এসহাক মৌলভী, মাওলানা আব্দুল্লাহ ইবনে ফজল, আঃ ছাত্তার ত্রিশালী ও মাওলানা মোবারক আলীর নাম কৃতজ্ঞাতার সাথে স্মরণ করেন।
মোজাফফর মোল্লা নামাজ, রোজা, স্বামীর খেদমত, বেহেস্ত-দোজখ ও বিভিন্ন মাছয়ালা সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। তিনি গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন আয়োজিত ঘরোয়া সভায় বক্তব্য রাখেন। এ ধরণের মজলিসে সাধারণত মাইক ব্যবহৃত হয় না। ২৫/৩০ বছর আগে ছোটনা হাইস্কুল ময়দানে প্রথম বক্তব্য রাখেন।
বাড়ির সভাগুলোতে মহিলা শ্রোতা বেশী থাকেন। এ ধরণেল সভায় তিনি একই বক্তব্য রাখেন। তবে তার কয়েকজন সঙ্গী ছিলেন। তারাও বিভিন্ন মাসলা-মাসায়েল সম্পর্কে আলোচনা করতেন। এদের মধ্যে মরহুম তমিজ উদ্দিন, মরহুম মোহাম্মদ অন্যতম। এছাড়া আনোয়ার হোসেন ও চাঁন মিয়া খলিফাও অনেক সভায় অংশগ্রহণ করেছেন।
তিনি এলাহাবাদ, ছোটনা, ফুলতলী, পারুয়ারা, রামপুর, গনিপুর, কাজিয়াতল, হাজীগঞ্জ, মাদারটেক ও লালবাগ (ঢাকা) এবং সিলেটে মাহফিল করেছেন।
ঘরোয়া মাহফিলগুলো মাগরিবের নামাজে পর শুরু হয়। বাড়ির সবাই খাওয়া-দাওয়া শেষে বিছানা নিয়ে উঠানে বসেন এবং মোল্লা সাহেব বয়ান করেন। আলোচনা শেষে শ্রোতারা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেন, তিনি জবাব দেন এবং পরিশেষে মোনাজত করেন। তিনি ঘরোয়ার মাহফিল বাদে বড় বড় মাহফিলেও বক্তব্য রাখেন। মোল্লা সাহেব জানান, আগে ওয়াজের মৌসুমে (শীত সিজনে) ৫০/৬০টি মাহফিলে অংশ নিতেন। এখন বয়স বেড়ে যাওয়ায় ২০/২৫টি সভায় বক্তব্য রাখেন। তিনি কোন মাহফিলেই সম্মানীর ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করেন না। প্রথম প্রথম ১৫/২০ টাকায় মাহফিল করেছেন এখন ৫০০/১০০০ টাকা পান। তবে কখনও চেয়ে নেন না বলে জানান।
তার স্মরণীয় মাহফিল সম্পর্কে তিনি বলেন- ১০/১২ বছর আগে সিলেটের সরকারহাট ঈদগাহ মরদানে প্রচন্ড শীতের মধ্যে সভা করেন। শীতের কারণে মুসল্লীগণ চলে যাচ্ছিল এমন সময় তাকে সুযোগ দেয়া হয়। এ সময় তিনি “প্রেম বার, ভাই হে, প্রেমে দেওয়ানা, পাহাড় জ্বলিয়া গেল মুছা জ্বলেনা”- গজলের মাধ্যমে বক্তব্য শুরু করেন। তার বক্তব্য শোনার জন্য সবাই নড়েচড়ে বসে এবং ২টা পর্যন্ত সহ¯্রাধিক লোকের উপস্থিতিতে তিনি বক্তব্য রেখে সকলের প্রশংসা অর্জন করেন।
মোজাফফর মোল্লা এলাহাবাদে মহিলাদের জন্য জুম্মার নামাজ এবং ঈদের নামাজের জামাতের ব্যবস্থা করেছেন। তার ছেলে মুনতাসীর আহমদ ও মোখলেছুর রহমান অত্র এলাকায় বিজ্ঞ আলেম হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৯৯৯ সালে পবিত্র মক্কা নগরীতে গিয়ে হজ্জ সমাপন করেছেন। তিনি বৃদ্ধ বয়সেও প্রতিদিন সুবহে সাদিকের তাহাজ্জত নামাজ পড়ার জন্য “ঘুম-ছে বেহাতের হায় নামাজ ও মুমিন মুসলামান ভাইও, ঘুমাইওনা আর, মাবুদ মাওলায় মায়া করে ডাকে বারে বার” যত দিন বেঁচে থাকবেন তত দিন তিনি ইসলামের খেদমত করবেন বলে জানান।
১৯.০২.১৩
মহিলাদের প্রিয় হুজুর মোজাফফর মোল্লা
মমিনুল ইসলাম মোল্লাযে কোন পেশায় দক্ষতা অর্জনের জন্য পেশাগত শিক্ষার বিকল্প নেই। তবে কেউ কেউ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করেও কর্মজীবনে ভাল করতে পারেন না। আবার এর ব্যতিত্রæমও দেখা যায়। এমনই একজন রাখেন ব্যতিক্রমধর্মী ওয়ায়েজীন আলহাজ্ব মোজাফফর হোসেন মোল্লা। তিনি পেশাগতভাবে একজন ব্যবসায়ী হলেও বক্তা হিসেবে তার খ্যাতি ছড়িয়ে আছে দেবিদ্বার, বুড়িচং, চান্দিনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। তিনি মহিলাদের প্রিয় মাওলানা হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত।
আলহাজ্ব মোজাফফর হোসেন মোল্লা দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে ৭৮ বছর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আলহাজ্ব হাসিদ আলী মোল্লা। তিনি এলাহাবাদে লেখাপড়া শেষে মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা নাই বল্লেই চলে।
তিনি হুজুরের কাছে শুধুমাত্র কোরান শরীফ শিক্ষা লাভ করেন। বাকী বিষয়গুলো তিনি স্বীয় চেষ্টায় আয়ত্ব করেন। বাংলায় হাদিস, কোরান, বিভিন্ন ইসলামী মনীষীর লেখা ইসলামী গ্রন্থ থেকে তিনি জ্ঞানার্জন করেন। তিনি শিক্ষাগুরু হিসেবে পারুয়ারার এসহাক মৌলভী, মাওলানা আব্দুল্লাহ ইবনে ফজল, আঃ ছাত্তার ত্রিশালী ও মাওলানা মোবারক আলীর নাম কৃতজ্ঞাতার সাথে স্মরণ করেন।
মোজাফফর মোল্লা নামাজ, রোজা, স্বামীর খেদমত, বেহেস্ত-দোজখ ও বিভিন্ন মাছয়ালা সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। তিনি গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন আয়োজিত ঘরোয়া সভায় বক্তব্য রাখেন। এ ধরণের মজলিসে সাধারণত মাইক ব্যবহৃত হয় না। ২৫/৩০ বছর আগে ছোটনা হাইস্কুল ময়দানে প্রথম বক্তব্য রাখেন।
বাড়ির সভাগুলোতে মহিলা শ্রোতা বেশী থাকেন। এ ধরণেল সভায় তিনি একই বক্তব্য রাখেন। তবে তার কয়েকজন সঙ্গী ছিলেন। তারাও বিভিন্ন মাসলা-মাসায়েল সম্পর্কে আলোচনা করতেন। এদের মধ্যে মরহুম তমিজ উদ্দিন, মরহুম মোহাম্মদ অন্যতম। এছাড়া আনোয়ার হোসেন ও চাঁন মিয়া খলিফাও অনেক সভায় অংশগ্রহণ করেছেন।
তিনি এলাহাবাদ, ছোটনা, ফুলতলী, পারুয়ারা, রামপুর, গনিপুর, কাজিয়াতল, হাজীগঞ্জ, মাদারটেক ও লালবাগ (ঢাকা) এবং সিলেটে মাহফিল করেছেন।
ঘরোয়া মাহফিলগুলো মাগরিবের নামাজে পর শুরু হয়। বাড়ির সবাই খাওয়া-দাওয়া শেষে বিছানা নিয়ে উঠানে বসেন এবং মোল্লা সাহেব বয়ান করেন। আলোচনা শেষে শ্রোতারা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেন, তিনি জবাব দেন এবং পরিশেষে মোনাজত করেন। তিনি ঘরোয়ার মাহফিল বাদে বড় বড় মাহফিলেও বক্তব্য রাখেন। মোল্লা সাহেব জানান, আগে ওয়াজের মৌসুমে (শীত সিজনে) ৫০/৬০টি মাহফিলে অংশ নিতেন। এখন বয়স বেড়ে যাওয়ায় ২০/২৫টি সভায় বক্তব্য রাখেন। তিনি কোন মাহফিলেই সম্মানীর ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করেন না। প্রথম প্রথম ১৫/২০ টাকায় মাহফিল করেছেন এখন ৫০০/১০০০ টাকা পান। তবে কখনও চেয়ে নেন না বলে জানান।
তার স্মরণীয় মাহফিল সম্পর্কে তিনি বলেন- ১০/১২ বছর আগে সিলেটের সরকারহাট ঈদগাহ মরদানে প্রচন্ড শীতের মধ্যে সভা করেন। শীতের কারণে মুসল্লীগণ চলে যাচ্ছিল এমন সময় তাকে সুযোগ দেয়া হয়। এ সময় তিনি “প্রেম বার, ভাই হে, প্রেমে দেওয়ানা, পাহাড় জ্বলিয়া গেল মুছা জ্বলেনা”- গজলের মাধ্যমে বক্তব্য শুরু করেন। তার বক্তব্য শোনার জন্য সবাই নড়েচড়ে বসে এবং ২টা পর্যন্ত সহ¯্রাধিক লোকের উপস্থিতিতে তিনি বক্তব্য রেখে সকলের প্রশংসা অর্জন করেন।
মোজাফফর মোল্লা এলাহাবাদে মহিলাদের জন্য জুম্মার নামাজ এবং ঈদের নামাজের জামাতের ব্যবস্থা করেছেন। তার ছেলে মুনতাসীর আহমদ ও মোখলেছুর রহমান অত্র এলাকায় বিজ্ঞ আলেম হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৯৯৯ সালে পবিত্র মক্কা নগরীতে গিয়ে হজ্জ সমাপন করেছেন। তিনি বৃদ্ধ বয়সেও প্রতিদিন সুবহে সাদিকের তাহাজ্জত নামাজ পড়ার জন্য “ঘুম-ছে বেহাতের হায় নামাজ ও মুমিন মুসলামান ভাইও, ঘুমাইওনা আর, মাবুদ মাওলায় মায়া করে ডাকে বারে বার” যত দিন বেঁচে থাকবেন তত দিন তিনি ইসলামের খেদমত করবেন বলে জানান।
১৯.০২.১৩
0 Comments